আশরাফুল মামুনঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত অর্থ বছর থেকে অর্থাৎ ২ বছর ধরে কোন সরকারি ওষুধ নেই। এতে করে তিনটি উপজেলার সাধারণ রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া উপজেলার ২ লক্ষ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল হাসপাতালটির বিভিন্ন সেবা নিয়েও রয়েছে সেবা প্রত্যাশীদের অভিযোগ। সব ধরনের চিকিৎসার জন্য রোগীরা বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে হয় এমন টা জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওষুধ কেনার জন্য চেষ্টায় আছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আখাউড়া উপজেলা ছাড়াও নিকটবর্তী হওয়ায় পার্শ্ববর্তী বিজয় নগর উপজেলার সিংগারবিল এলাকার কিছু মানুষ এবং জেলা সদর উপজেলার কোড্ডা বরিশল গ্রাম সহ প্রায় ২ লক্ষ জনগোষ্ঠী এই হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা গ্রহন করে থাকেন। উক্ত এলাকাগুলো তে বিকল্প কোন চিকিৎসার ব্যাবস্থা না থাকায় যেকোন সমস্যায় প্রথমে এখানেই ছুটে আসেন অসহায় মানুষ গুলো। কিন্তু এখানে এসেও তাদের পড়তে হয় নানা ভোগান্তির মাঝে। চিকিৎসার গুরুত্ব বিবেচনায় কয়েক বছর আগে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হলেও বাড়েনি চিকিৎসক ও তার মান। ওষুধ না থাকার পাশাপাশি ন্যুনতম চিকিৎসা সামগ্রীও নেই এখানে। মাথা ফাটা রোগী আসলেও তাদের কে রেফার করা হচ্ছে সদর হাসপাতালে। রোগীদের বিছানাপত্র, আসবাবপত্র, চাদর, টয়লেটের দুর্গন্ধে সুস্থ মানুষের যেন অসুস্থ হওয়ার উপক্রম। হাসপাতালের এসব অব্যবস্থাপনায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলছেন বিত্তবানরা বাহির থেকে ওষুধ কিনে চিকিৎসা নিতে পারলেও সাধারণ গরীব মানুষদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া বাহির থেকে ওষুধ কিনে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
আকরাম হোসেন নামে একজন বলেন, এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেবাও ঠিকমত পাওয়া যায় না এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই এটাও নাকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স! মোঃ শাহিন মোল্লা বলেন,চিকিৎসক গন ওষুধ কোম্পানির (রিপ্রেজেন্টিভ) লোকদের নিয়ে শুধু ব্যস্ত থাকে। মোঃ শাওন নামে একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,যদি অস্বাস্থ্যকর পুরনো জরাজীর্ণ ভবনটিতেই রোগীদের সেবা নিতে হয় তাহলে কোটি টাকা খরচ করে নতুন কমপ্লেক্সটি করার দরকার কি ছিলো ?? পুরো উপজেলার জন্য একটিমাত্র সরকারি হাসপাতাল এর মধ্যে নেই ভালো ডাক্তার, ভালো চিকিৎসা কিছুই নেই, নেই একটি এমআরআই মেশিন। এখানে রোগী আসলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেফার করা হয়। যদি অন্যত্র ই রেফার করার প্রয়োজন হয় আর ভালো চিকিৎসা না ই পাওয়া যায় অযথা সরকারের এতো টাকা খরচ করে হাসপাতালটি খুলে রাখার দরকার কি? বরং অফ করে দিলে সরকারের অনেক টাকা বেচে যেতো। প্রাথমিক চিকিৎসা তো ফার্মেসীতেও নেওয়া যায়। মনের ভেতরের আক্ষেপ থেকে কথাগুলো বললাম।শায়না সুহা নামে একজন লিখেছেন, জম্মের পর থেকে দেখতেছি হাসপাতালের এই অবস্থা তারপর রাত ১১ টার পর ফার্মেসী গুলো বন্ধ থাকে তখন সারারাত দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এবিষয়ে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ইনচার্জ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুর রহমান বলেন, গত অর্থ বছর থেকে এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে কোন সরকারি ওষুধ নাই, রোগীরা বাহির থেকে ওষুধ কিনে আনেন। তিনি আরো বলেন, আমরা চেষ্ঠা করছি সরকারি ভাবে ওষুধ কেনার জন্য।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ নূরে আলম বলেন, আমি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার মান নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু কোন ওষুধ নেই এই বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। এসময় তিনি আরো বলেন, ওষুধ না থাকার বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।
তেপান্তরে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Copyright © 2024 তেপান্তর | Design & Developed By: ZamZam Graphics