Tepantor

ফেসবুক লাইভে আপন ভাই চাচাকে অভিযুক্ত করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার আত্নহত্যা

১৮ এপ্রিল, ২০২৪ : ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মোস্তাফিজ চৌধুরী: জেলা শহরের উত্তর পৈরতলায় আপন তিন ভাই,আপন চাচা ও চাচী, এবং এক ভাইয়ের বউকে ফেসবুক লাইভে অভিযুক্ত করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক এম বেলাল হোসেন বিল্লাল মিয়া বিষ (কেরির বড়ি) খেয়ে আত্নহত্যা করেছেন। স্বজনদের অভিযুক্ত করে আত্নহত্যা করার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার। আজ ১৭’ই এপ্রিল রোজ বুধবার বিকেল আনুমানিক ৫ টায় বিষ খেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে আপন তিন ভাই হেলাল মিয়া,আলাল মিয়া,ও নাজমুল হাসান, আপন চাচা আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী জামিলা খাতুন, এবং হেলাল মিয়ার স্ত্রী মুন্নী খাতুনকে অভিযুক্ত করে তাদের কারণে জীবন দিয়ে দিচ্ছেন তথা মরে যাচ্ছেন বলে জানান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বিল্লাল মিয়া।

জানা যায়, বিল্লাল মিয়ার পিতা শাহেদ আলী মারা যাওয়ার পর থেকেই বিল্লাল মিয়া, তার দুই বোন সাহান ও রোকসানার সাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিলো তার তিন ভাই হেলাল,আলাল,ও নাজমুলের। তারা প্রায়ই বিল্লাল ও তার পরিবারকে মারধর ও মানসিকভাবে অত্যাচার করে আসছে বলে অভিযোগ। এমনি সম্পত্তির বিরোধে গতকাল ১৬’ই এপ্রিল রোজ মঙ্গলবার দুপুর ১২’টায় বিল্লাল মিয়া ও তার স্ত্রী সন্তানদের উপর তারা আবারও হামলা চালায়। এঘটনায় সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯’এ যোগাযোগ করা হলে সদর মডেল থানার আওতাধীন শহর পুলিশ ফাড়ির এএসআই পলাশ চন্দ্রের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা বিল্লাল মিয়া ও তার পরিবারকে রক্ষা করে। পরবর্তীতে এঘটনায় সেদিনই থানায় একটি অভিযোগ দেয় স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার। থানায় অভিযোগ দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তার ভাইয়েরা এবং চাচা বিল্লাল মিয়া চাপ প্রয়োগ করে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য, এবং তাকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি প্রদান করে। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে বিল্লাল বিষ (কেরির ট্যাবলেট) খেয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন। বিষ খাওয়ার পর তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং সেখান থেকে আইসিইউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মৃত্যুর পর তার স্ত্রী হাসপাতাল থেকে এঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে যেতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হয় এবং সামাজিকভাবে সমঝোতা করতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। অভিযুক্তদের বাচানোর স্বার্থে সবকিছু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার বলেন, এই সম্পত্তির জন্য তারা আমাদের উপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। গতকাল তারা আমার ও আমার পরিবারের উপর আক্রমণ করে, আমাদের হুমকি দেয় মেরে ফেলার। আমার ছেলেদের কেটে নদীতে বাসিয়ে দিবে। আমি ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে জানালে পুলিশ এলে জীবন রক্ষা পাই।

তিনি আরও বলেন, আমার শশুর মারা যাবার পর থেকেই তারা এরকম করে যাচ্ছে। আমার স্বামীর সাথে তার দুই বোনের ভালো সম্পর্ক তারা মেনে নিতে পারে নাই। জায়গা সম্পত্তির জন্য তারা আমার স্বামীকে আজ মেরে ফেললো।

মোর্শেদা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর বিষ খাওয়ার পর থেকে মারা যাওয়া সবকিছু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে থানায় মামলা করতে যেতে দেয়া হয়নি। তাড়াহুড়ো করে হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে এসেছে। সবাই মিলে আমাকে চাপ দিচ্ছে,কেউ সহযোগিতা করছে না। আমি ন্যায়বিচার চাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, এব্যাপারে আমি খোজখবর নিচ্ছি।

বিল্লাল মিয়ার আপন ভাইদের ও তার চাচার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এডভোকেট লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Tepantor

তেপান্তরে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।