Tepantor

ভূমি অফিসের নায়েবের সহায়তায় বেআইনিভাবে কৃষি জমি কেটে পুকুর তৈরি!

১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ : ৫:৩৬ অপরাহ্ণ

তেপান্তর রিপোর্ট: ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন বা মাটি বিক্রি করা নিষিদ্ধ হলেও সরকারি সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি ও পুকুর তৈরি করছে সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের অষ্টগ্রাম এলাকার আজিজুল হক ও জসিম মিয়া। অষ্টগ্রাম বাজার থেকে আনুমানিক পাচশো গজ পশ্চিমে সদর – তালশহর সড়কের পাশের দুটি ফসলি জমি থেকে গত চারদিন যাবত প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রি করছেন অষ্টগ্রাম গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও জসিম মিয়া নামের দুই ব্যক্তি। জসিম মিয়ার এক্সেভেটর(ভেকু মেশিন) এর মাধ্যমে জমির মাটি কাটা হচ্ছে।আর আজিজুল ইসলাম এই জমির মালিক। আজিজুল ইসলাম নিজেকে এসিল্যান্ড অফিসের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে থাকেন। এ কাজে তালশহর পূর্ব ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা পঙ্কজ বর্দ্ধন তাদেরকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পঙ্কজ বর্দ্ধন তেপান্তরকে বলেন,’ যারা মাটি কাটছেন, আজিজুল আর জসিম, তারা হল ভূমিদস্যু এবং মাটিচোর আর আমি হলাম ভূমি রক্ষক। আমি কিছুতেই তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারি না। এসিল্যান্ড স্যার ফোন দিয়েছিলেন, আমি বর্তমানে ঘটনাস্থলে আছি।এখানে কেউ নেই, সবাই পালিয়ে গেছে। আর আমি আরও তিন দিন আগে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলাম।’

তবে তার পাঠানো রিপোর্টের কপি দেখতে চাইলে তিন দিন আগে পাঠানো রিপোর্টের কোন কপি তিনি প্রতিবেদককে দেখাতে পারেন নি।

১৭ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অষ্টগ্রাম বাজারের পশ্চিম দিকে তালশহর সড়কের পাশে দুটি জমিতে ভেকু মেশিন লাগিয়ে অবাধে মাটি কাটা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি তিন ফসলি জমি মাড়িয়ে ট্রাক্টর দিয়ে সেই মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, মাটি পরিবহনের কারণে তালশহর রাস্তার ওপর মাটি পড়ে স্তর জমে গেছে। সামান্য বাতাস হলেই প্রচ- ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায়, আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে।

ছবি: পুকুর খননকারী আজিজুল।

যোগাযোগ করা হলে জমির মালিক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ আমি আসলে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত আবার৷ আমি কিছুই করিনা। আর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকের সঙ্গে কাজ করি বলে অনেকে মনে করে আমি ভূমি অফিসে চাকরি করি। আর ওই জমিতে তেমন কোনো ফসল হয় না। তাই মাটি কেটে পুকুর করছি যাতে সেখানে মাছ চাষ করা যায়।জমির শ্রেনী পরিবর্তন করতে অনেক সময় লাগে তবে নায়েবের সাথে কথা বলেছি যাতে তাড়াতাড়ি কাগজপত্র ঠিক করা যায়। ‘

ভূমি অফিসে আজিজুল নামে কেউ কর্মরত আছে কি-না জানতে চাইলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশারফ হোসেন তেপান্তরকে বলেন, ‘ ভূমি অফিসে আজিজুল নামে কেউ চাকরি করে না আর করলেও ভূমি অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে প্রধান কর্মকর্তা কারোরই ফসলি জমি কেটে পুকুর করার সুযোগ নেই। আমি ইতিমধ্যে খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।আমি ছুটিতে আছি বলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারছি না তবে দ্রুতই জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করবো,কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’

Tepantor

তেপান্তরে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।