তেপান্তর রিপোর্ট: দূর্নীতির অভিযোগ উঠা কাজে ঠিকাদারের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে অতিরিক্ত ২০ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী। এই টাকা কোন কাজে ব্যয় হচ্ছে তার হিসেব নেই। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী প্রটেকটিভ ওয়ার্কের জন্যে অতিরিক্ত টাকার প্রস্তাবনা দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
জেলার আশুগঞ্জ-তালশহর সড়কটির ৮কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠে। এনিয়ে এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন সেখানকার ৩ ইউপি চেয়ারম্যান। কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। এলজিইডি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের প্রমান পান।
কিন্তু শত আপত্তিতেও ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেন।
গত বছরের ১৬ জুন কাজের দরপত্র আহবান করে এলজিইডি। ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায় কাজ সম্পন্ন করতে মেসার্স লোকমান হোসেন এন্ড মোস্তফা কামাল (জেবি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হয়। চুক্তিমতে ওই বছরের জুন মাসে সংস্কার কাজ শুরু করার কথা থাকলেও প্রায় ৪ মাস পিছিয়ে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ঠিকাদার কাজ শুরু করে। কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের পাথর, ইটের খোয়া, দুর্বল ম্যাকাডম ব্যবহার করার অভিযোগ উঠে।
নিম্নমানের কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আশুগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবীর মামলা করেন ঠিকাদার। এনিয়ে কাজ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর নির্বাহী প্রকৌশলী নিজে কাজ তদারকি করবেন বলে এই আশ্বাস দিলে ফের কাজ শুরু করেন। এরপরই দেশের বাইরে চলে যান নির্বাহী প্রকৌশলী। আর এই সুযোগে পুরোদমে নিম্নমানের কাজ চালিয়ে যায় ঠিকাদার।
সুত্র জানায়, নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করা ছাড়াও ওই সড়কের একটি অংশে নির্মিত প্যালাসাইডিং ওয়াল সিসি ঢালাই করা ছাড়াই করা হয়। পরিদর্শনে আসা কুমিল্লা জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান কাজের অনিয়ম দেখতে পান। কাজে কাটা পাথরের পরিবর্তে মাটি মিশ্রিত সিঙ্গেলস পাথর ব্যবহার করা হয়।
আড়াইসিধা ইউপি চেয়ারম্যান ডাক্তার মোঃ সেলিম বলেন, পরে কাজ কিভাবে হয়েছে তা জানিনা। রাগে আর কাজ দেখতে যাইনি। ব্যাপক দূর্নীতি হওয়া এই কাজে ঠিকাদারকে বাড়তি সুবিধে দিতে অতিরিক্ত ২০ লাখ টাকার সংস্থান করে দেন নির্বাহী প্রকৌশলী। নিম্নমানের কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠার পর বিভিন্ন পক্ষকে ম্যানেজ করতে অর্থ ঢালা হয় বলে আলোচনা রয়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলীর জানান, কাজটি ভিজিটে গেলে স্থানীয় জনগন ও জনপ্রতিনিধিরা তাকে খালের পাড়ে রাস্তা যাতে ভেঙ্গে না যায় সেজন্যে কিছু প্রটেকটিভ ওয়ার্ক করার অনুরোধ করেন। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি সেখান থেকে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে ফোনে এনিয়ে কথা বলেন। প্রকল্প পরিচালক তাকে বলেন কুমিল্লার তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী যদি মনে করেন দরকার তাহলেই হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সেই প্রস্তাবনায় আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। তিনি আরো বলেন, রাস্তার আগের ইষ্টিমিটে গ্যাপ ছিলো। প্রটেকটিভ কোন ওয়ার্ক ছিলোনা। তার দাবী প্রটেকটিভ ওয়ার্কের কোন বিল তিনি পরিশোধ করেননি। কাজে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী যে ত্রুটি পেয়েছেন তা সংশোধনর করার পরই বিল দেয়া হবে।
তেপান্তরে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Copyright © 2024 তেপান্তর | Design & Developed By: ZamZam Graphics