Tepantor

ভূয়া কাগজপত্র ও নিয়মবর্হিভূত ভাবে সরকারি চাকরি,তদন্তে প্রমান,তবু ব্যবস্থা নিচ্ছেনা প্রশাসন

৩ জানুয়ারি, ২০২১ : ৬:২৫ অপরাহ্ণ

তেপান্তর রিপোর্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের হেলেনা খাতুন ভূয়া সার্টিফিকেট ও নিয়মবর্হিভুত ভাবে মহল্লাদারের সরকারি চাকরি করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি অভিযোগ জমা পড়েছে গত ৬ সেপ্টম্বর ২০২০ তারিখে। আর আজ ৩ জানুয়ারি ২০২১। এর মধ্যে ৪ মাস পার। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর সেই প্রতিবেদন ইউনও বরাবর দাখিলও করা হয়। তারপরই রহস্যজনক কারনে লিখিত অভিযোগটি উঠিয়ে নিতে আবেদন জমা পড়েছে। অভিযোগকারী ব্যক্তি ও অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করা ব্যক্তি একই ব্যক্তি। তিনি হলেন বুধল ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামের ফরসু মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া। এবং হেলেনা খাতুনের স্বামীর নাম মৃত এমদাদুল হক, তার বাবার বাড়ি নন্দনপুর এলাকায়।

এদিকে গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম যখন অভিযোগ জমা হয় তারপর ১৪ দিন পার হলেও ইউএনও সেটা জানতেননা বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। আবার তদন্ত করার পর তদন্ত কর্মকর্তা ইউএনও বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গত ১৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখ। তারপর পেড়িয়ে গেছে ৪৮ দিন, কিন্তু ইউএনও বলছেন এই বিষয়টিও তিনি জানেন না। তবে আজ ৩ জানুয়ারি ইউএনও পঙ্কজ বড়ুয়া বলেছেন তিনি তার ‘সিএ’র কাছে খোজ নিবেন, এবং অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে হেলেনা খাতুনের বক্তব্যে বলা আছে, হেলেনা বলেছেন, আমার বাড়ি বুধলের ৭ নং ওয়ার্ডে, কিন্তু চাকরির জন্য ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েছি, তবে ৩ নং ওয়ার্ডে আমার কোন থাকার জায়গা নেই। ভোটার আইডিতে আগে আমি তালশহর পূর্ব ইউনিয়নে ছিলাম। কিন্তু ট্রান্সফার করে বুধল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েছি। আমার আইডি কার্ডে ৪র্থ শ্রেণী পাশ কিন্তু চাকরির জন্য আমি বুধল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর পাশের সনদ সংগ্রহ করি।

এ বিষয়ে বুধল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাহেদ আলী বলেছেন, হেলেনা খাতুন আমার স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করেছে এমন কোন প্রমান নেই। নথিপত্রে এর কোন রেকর্ডও নেই। তার সার্টিফিকেটের প্যাড ও সাক্ষর কোনটাই আমার বা আমার স্কুলের নয়।
উপরের কথাগুলো স্বীকার করে এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক একটি প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছেন।

এদিকে হেলেনা খাতুন বুধল ইনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছেন ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার সিরাজুল ইসলাম।

ভুয়া কাগজপত্র ও নিয়মবর্হিভুত ভাবে সরকারি চাকরি করার বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কর্মকর্তা। সেই প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, বাদী, বিবাদী, স্থানীয় মেম্বার,প্রধান শিক্ষক,সাবেক ইউপি সচিব,চেয়ারম্যানের বক্তব্য পর্যালোচনা করে বুঝা যাচ্ছে যে, বিবাদী হেলেনা খাতুন চাকুরীর জন্য ভূয়া শিক্ষা সনদ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বুদল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করেন। প্রকৃত পক্ষে হেলেনা খাতুন ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নয় এবং অষ্টম শ্রেণী পাশ নন। মহল্লাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গজেটের ৬ মে ২০১৫ প্রকাশিত তফসিল-১ বিধি ২(৯)(১০) ও (১৫) এবং ৪,৫ ও ৬ দ্রষ্টব্য এ ক্রমিক নং -২ এ মহল্লাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে অষ্টম শ্রেণী উর্ত্তীন অথবা কোন স্বীকৃত বোর্ড হতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের পরীক্ষার উর্ত্তীন হওয়ার শর্ত রয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা এই বলে মতামত দিয়েছেন যে, হেলেনা খাতুন নিয়োগ পাওয়ার বিষয়ের অভিযোগটি প্রাথমিক ভাবে সত্যতা পাওয়া যায়।

Tepantor

তেপান্তরে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।